📍 আন্তর্জাতিক ডেস্ক | ১৮ জুন ২০২৫
তেহরানের উপকণ্ঠে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ পরিচালিত একটি গোপন ড্রোন ও বিস্ফোরক তৈরির কারখানার সন্ধান পাওয়ার পর তা গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী। প্রেস টিভির বরাতে এমনটাই জানিয়েছে ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।
প্রেস টিভির খবরে বলা হয়, তিনতলা একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে সেখানে ড্রোন তৈরির সরঞ্জাম, যন্ত্রাংশ, ধাতব উপাদানসহ বিস্ফোরক তৈরির উপকরণ জব্দ করে পুলিশ। ইরানি কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন, বাড়িটিতে ড্রোন তৈরি এবং সেগুলোকে নাশকতা ও গুপ্তচরবৃত্তির কাজে ব্যবহারের প্রস্তুতি চলছিল।
রোববার প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, অভিযানে জব্দ করা বস্তুগুলোর মধ্যে রয়েছে ড্রোনের পাখা, কাঠামো ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সরঞ্জাম।
এ সংক্রান্ত খবরে ইসরায়েলের আগের কিছু স্বীকারোক্তির উল্লেখ করে বলা হয়েছে, মোসাদের এজেন্টরা বিগত আট মাস ধরে ইরানে ড্রোন পাচার করছিল, যার লক্ষ্য ছিল ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনাগুলোতে হামলা চালানো।
একইদিন তেহরানের রাস্তায় একটি ট্রাকে ড্রোন পরিবহণের সময় সেটি থামিয়ে দেন একজন ইরানি গোয়েন্দা কর্মকর্তা। নাটকীয়ভাবে ট্রাকের পেছনে ধাওয়া করে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যভেদী গুলিতে ট্রাকটি থামিয়ে দেন তিনি। পরে গাড়িটি থেকে উন্নত প্রযুক্তির ইসরায়েলি ড্রোন উদ্ধার করা হয়।
প্রতিবেদন অনুসারে, এই অভিযানে পাওয়া তথ্য-উপাত্তের সঙ্গে সাম্প্রতিক কিছু পশ্চিমা প্রতিবেদনের মিল পাওয়া গেছে। যুক্তরাজ্যের দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকার মতে, ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা ঘাঁটির আশেপাশে মোসাদ এজেন্টদের উপস্থিতির প্রমাণ মিলেছে।
ইরানি কর্তৃপক্ষ বলছে, ড্রোন কারখানাটি ইসরায়েলি সামরিক ও গোয়েন্দা তৎপরতার অংশ। দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী এখন সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে এবং দেশজুড়ে সন্দেহভাজন ‘ইহুদিবাদী নেটওয়ার্ক’ নির্মূল অভিযানে নেমেছে।
গত কয়েক সপ্তাহে অনেক সন্দেহভাজন বিদেশি এজেন্টকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ইরান জানিয়েছে, তাদের লক্ষ্য—ইসরায়েল ও তার মিত্রদের হুমকির জবাবে কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
এদিকে, গত শুক্রবার ইসরায়েলের হঠাৎ হামলায় ইরানের কয়েকজন শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা ও পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হন। জবাবে ইরান ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায় ইসরায়েলের সামরিক ও শিল্প স্থাপনাগুলোর ওপর।
বিশ্লেষকদের মতে, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান উত্তেজনা নতুন এক স্তরে পৌঁছেছে, যা পুরো মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তাব্যবস্থার ওপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে।