গাজা উপত্যকায় হামাসের সঙ্গে চলমান লড়াইয়ে ইসরায়েলের সাত সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। বুধবার (২৫ জুন) সকালে এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ এ তথ্য নিশ্চিত করে। — খবর এএফপির।
বিবৃতিতে বলা হয়, দক্ষিণ গাজা উপত্যকায় সংঘর্ষের সময় একটি ব্যাটালিয়নের পাঁচ সেনা এবং একজন প্লাটুন কমান্ডার প্রাণ হারান। আরও একজন সেনা নিহত হয়েছেন, তবে তার পরিবারের অনুরোধে পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
এই প্রাণহানির ফলে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলি সেনা নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৪৩০-এর বেশি।
প্রসঙ্গত, ওই বছরের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলের ভেতরে বড় ধরনের হামলা চালায়। এতে ১ হাজার ২১৯ জন ইসরায়েলি নিহত হন, যাদের অধিকাংশই ছিলেন বেসামরিক নাগরিক। একইসঙ্গে হামাস ২৫১ জনকে অপহরণ করে গাজায় নিয়ে যায়। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, এদের মধ্যে এখনো ৪৯ জন গাজায় অবস্থান করছেন এবং তাদের মধ্যে অন্তত ২৭ জন ইতোমধ্যে মারা গেছেন বলে দাবি করা হয়েছে।
হামলার প্রতিক্রিয়ায় সেদিন থেকেই গাজায় ব্যাপক বিমান ও স্থল হামলা শুরু করে ইসরায়েল। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, এই হামলায় এ পর্যন্ত ৫৬ হাজার ৭৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। জাতিসংঘ গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যকে সাধারণত নির্ভরযোগ্য হিসেবে বিবেচনা করে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগ, চলতি বছরের মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে ইসরায়েল গাজার ওপর কঠোর অবরোধ আরোপ করে, খাদ্য, পানি ও চিকিৎসাসহ সব ধরনের সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। ফলে উপত্যকাটির প্রায় ২০ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষসদৃশ পরিস্থিতির মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।
এদিকে, ইরানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার একদিন পর মঙ্গলবার ইসরায়েলি সেনাপ্রধান হার্জি হালেভি জানান, এখন দেশটির “মূল মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু” হবে গাজা।
এই ঘোষণায় স্পষ্ট, ইরানের সঙ্গে সাময়িক উত্তেজনা প্রশমিত হলেও গাজা যুদ্ধের ভয়াবহতা কমার সম্ভাবনা এখনও ক্ষীণ।