বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান মন্তব্য করেছেন, “ফ্যাসিস্ট সরকারের শাসনামলে একটি খারাপ সিন্ডিকেট পেঁয়াজের দাম ৩০০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছে। এই সিন্ডিকেটটি বাণিজ্যমন্ত্রীসহ অনেক ক্ষমতাধর ব্যক্তির অধীনে কাজ করছে। আমাদের সন্তানরা বলছে, ৫ আগস্ট আমরা স্বাধীন হয়েছি, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এখনও এই সিন্ডিকেট ভাঙতে পারিনি। এরা এখনও আমাদের জাতির ওপর এক প্রকার চাপ সৃষ্টি করছে। তাই এই সিন্ডিকেটটিকে ভেঙে ফেলতে হবে।”
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ট্যাঙ্কেরপাড়ের জাতীয় বীর আব্দুল কুদ্দুস মাখন পৌর মুক্ত মঞ্চে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জেলা জামায়াতের আমীর মোহাম্মদ গোলাম ফারুক, এবং প্রধান বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মাসুম।
শফিকুর রহমান আরও বলেন, “এই সরকারের কাছে জাতির অনেক প্রত্যাশা রয়েছে। যারা ফ্যাসিস্ট সরকারের চিহ্নিত সদস্য, তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা উচিত নয়। তারা সরকারকে ব্যর্থ করে দেবে এবং জনগণের স্বপ্নকে ধ্বংস করবে।”
তিনি গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের পরিবারের প্রতি একটি চাকরি দেওয়ার আহ্বান জানান এবং বলেন, “আহতদের যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি দেওয়া রাষ্ট্রের পবিত্র কর্তব্য। তারা দেশের জন্য জীবন দিয়েছে, তাদের প্রতি সম্মান দেখানো উচিত।”
জামায়াতের আমীর আরও বলেন, “কোনো সরকারের ক্ষমতা স্থায়ী হয় না, এটি আওয়ামী লীগের পতনের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। আমাদেরকে যাতে আর কোনো অত্যাচারীর শাসন দেখতে না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।”
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “আমরা এমন সমাজ গড়তে চাই, যেখানে বিচারপ্রার্থীরা বিভিন্ন হয়রানির শিকার হবেন না। আদালতের বিচারক আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো শক্তির প্রতি প্রভাবিত হবেন না এবং আইন অনুযায়ী বিচার করবেন।”
তিনি বলেন, “আমরা এমন একটি দেশ চাই, যা অন্য কোনো দেশের অধীনতা মেনে নেবে না। আমরা বিদেশে বন্ধু রাখবো, তবে কাউকে প্রভু হিসেবে মেনে নেবো না।”
আশ্রয়ণ প্রকল্প সম্পর্কে অভিযোগ জানিয়ে তিনি বলেন, “এ প্রকল্পটি জনগণের চোখে ধুলা দেয়ার মতো। যারা এই প্রকল্প করেছেন, তারা সস্তা জনপ্রিয়তা অর্জনের চেষ্টা করেছেন।”
নিজ দলের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “জামায়াতে ইসলামী সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত দল। আমরা সকলকে ধৈর্য ধরতে বলেছি। আমাদের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে কোথাও কোনো অভিযোগ নেই।”
শফিকুর রহমান বলেন, “হত্যাকারিদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। হত্যাকারিদের শাস্তি পেতেই হবে।”
আওয়ামী লীগকে সতর্ক করে তিনি বলেন, “আমরা হিংসার রাজনীতি করবো না। ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, ক্ষমতা হারালে পাঁচ লক্ষ মানুষকে হত্যা করা হবে, কিন্তু গণঅভ্যুত্থানের পর পাঁচজনকেও হত্যা করা হয়নি।”
তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ ইসলামী চাদর গায়ে দিয়ে নতুন রূপে আবির্ভূত হয়েছে এবং বিশেষ একটি ইসলামী সংগঠনের নাম ব্যবহার করে অশান্তি তৈরি করতে চাচ্ছে। তবে জাতি সম্মিলিতভাবে তাদের এই অপচেষ্টা ব্যর্থ করে দেবে।”