ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ভর্তিতে পোষ্য ও খেলোয়াড় কোটা বাতিলের বিষয়টি জানাতে হাইকোর্টে রুল জারি করা হয়েছে। হাইকোর্ট বেঞ্চ, বিচারপতি ফাহমিদা কাদের এবং বিচারপতি মুবিনা আশরাফের নেতৃত্বে মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) এ নির্দেশ দেন। দুই সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব। তার সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সোলায়মান তুষার, অ্যাডভোকেট বায়োজিদ হোসাইন ও অ্যাডভোকেট নাঈম সরদার ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শফিকুর রহমান, সহযোগী হিসেবে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মাহফুজ বিন ইউসুফ, অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট একরামুল কবির এবং অ্যাডভোকেট মো. ঈসা।
ব্যারিস্টার পল্লব বলেন, ঢাবির শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছেলে-মেয়েরা পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর মধ্যে পড়ে না। তাদের সন্তানরা ভর্তি পরীক্ষায় ৪০ শতাংশ বা পাস নম্বর পেলেই ঢাবিতে ভর্তি হতে পারেন। এটির নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা নেই। এ বিধানের ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতি বৈষম্য করা হচ্ছে এবং এটি সংবিধান ও আপিল বিভাগের রায়ের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ক্রীড়া কোটা নিয়েও একই ধরনের সমস্যা রয়েছে।
২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ঢাবিতে শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানদের পোষ্য কোটা এবং খেলোয়াড় কোটা বাতিলের জন্য সুপ্রিম কোর্টে ১০ নভেম্বর রিট দাখিল করেন ব্যারিস্টার সোলায়মান তুষার। আগের ৫ নভেম্বর ঢাবি এবং সংশ্লিষ্টদের ই-মেইলে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়, যার জবাব না আসায় মানবাধিকার সংস্থা, অভিভাবক, সাধারণ নাগরিক এবং সুপ্রিম কোর্টের সাতজন আইনজীবীর পক্ষ থেকে রিট দাখিল করা হয়।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, ঢাবি বাঙালি জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক। এখানে ছাত্র-শিক্ষক ও কর্মকর্তারা সব গণতান্ত্রিক ও অধিকার রক্ষার আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন। সর্বশেষ ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের কোটা সংস্কার আন্দোলনেও ঢাবির ভূমিকা ছিল স্মরণীয়। একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়া অবশ্যই মেধার ভিত্তিতে হতে হবে। অন্য কোনো মানদণ্ডে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়া বৈষম্যমূলক, স্বেচ্ছাচারী এবং অযৌক্তিক। এর সঙ্গে কোনো বৈধ রাষ্ট্রীয় উদ্দেশ্যের সম্পর্ক নেই।
দেশের সর্বোচ্চ আদালত মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনাদের জন্য সরকারি, আধা-সরকারি এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে চাকরিতে মাত্র ৫ শতাংশ কোটা নির্ধারণ করেছেন। ঢাবিতে ভর্তি প্রক্রিয়ায়ও এ রায় প্রযোজ্য হতে হবে। নোটিশ পাওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি, নাতনি কোটা বাতিল হলেও পোষ্য কোটা এবং খেলোয়াড় কোটা বহাল রেখেছে কর্তৃপক্ষ।