র্যাবের সাবেক কোম্পানি কমান্ডার এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিনের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী এক ব্যক্তিকে গুম করে তার স্ত্রীকে ভয় দেখিয়ে রোজা ভাঙিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান।
তাজুল ইসলাম বলেন, “আলেপ উদ্দিন অসংখ্য মানুষকে গুম ও নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত। ভুক্তভোগীদের চোখ বেঁধে, ইলেকট্রিক শক দিয়ে এবং উল্টো করে ঝুলিয়ে নির্মম নির্যাতন করেছেন। তার বিরুদ্ধে তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করতে সময় লাগছে, কারণ নতুন নতুন ভুক্তভোগী এসে অভিযোগ দায়ের করছেন।”
চিফ প্রসিকিউটর আরও জানান, এক ভুক্তভোগীর স্ত্রীকে রমজান মাসে তার স্বামীকে হত্যার ভয় দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত শেষ করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য তদন্ত সংস্থা দিন-রাত কাজ করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) সম্প্রতি তাদের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দাবি করেছে, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও কয়েকজন শীর্ষ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা গুম ও নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত ছিলেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনার শাসনামলে সাড়ে ৩ হাজারের বেশি গুমের ঘটনা ঘটেছে।
গুমের শিকার ব্যক্তিরা দাবি করেছেন, তাদের গোপন আটক কেন্দ্রে এমনভাবে আটক রাখা হয়েছিল, যা বন্দিদের জন্য মৃত্যুর চেয়েও ভয়ানক অভিজ্ঞতা। জাতীয় গুম তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে এ ধরনের নির্যাতন পদ্ধতিগত এবং প্রাতিষ্ঠানিক বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এইচআরডব্লিউ র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ভেঙে দেওয়ার সুপারিশ করেছে এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে।
মানবাধিকার সংস্থাটি জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও স্বাধীন বেসামরিক তদারকি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছে, যাতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কার্যক্রম সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করা যায়।
এই ভয়াবহ অভিযোগগুলো সামনে আসার পর দেশের সাধারণ মানুষ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তদন্তের অগ্রগতি এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনার বিষয়টি এখন সময়ের ব্যাপার।
সুত্রা২৪