28.9 C
Dhaka
Sunday, June 15, 2025

পিলখানা হত্যাযজ্ঞ: আওয়ামী লীগকে ‘দুষলেন’ ফখরুল

advertisment
- Advertisement -spot_img

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেছেন, “১৬ বছর আগে পিলখানায় সংঘটিত ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ প্রতিরোধে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে আমরা যেন কখনো আপস না করি।”

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবস’ উপলক্ষে বনানী সামরিক কবরস্থানে শহীদ সেনা সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

পিলখানা হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, “২০০৯ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাযজ্ঞ ঠেকানোর জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি। দুদিন ধরে হত্যাকাণ্ড চললেও সরকার নির্বিকার ছিল।”

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের শত্রুরা সেনাবাহিনীর মনোবল ভেঙে দিতে বিডিআরের বিদ্রোহের নামে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। এটি ছিল দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর একটি বড় আঘাত।”

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ধন্যবাদ, তারা অন্তত এই দিনটিকে ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তবে আমরা চাই, এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ ও নিরপেক্ষ তদন্ত করা হোক, যাতে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা যায়।”

তিনি আরও বলেন, “শহীদ সেনা সদস্যদের আত্মত্যাগ যেন বিফলে না যায়। আমরা চাই বাংলাদেশ একটি শক্তিশালী স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হোক। আজকের দিনটি সেই প্রতিজ্ঞার দিন।”

২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে পিলখানায় সংঘটিত বিদ্রোহের পর বিডিআর-এর নাম বদলে ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ’ (বিজিবি) রাখা হয় এবং বাহিনীর পোশাকেও পরিবর্তন আনা হয়। বিদ্রোহ ও হত্যাকাণ্ডের বিচারের পরও বিভিন্ন মহল নতুন করে তদন্তের দাবি তোলে।

এই দাবির প্রেক্ষিতে গত ডিসেম্বর মাসে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সাত সদস্যের স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করে। একইসঙ্গে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক সেনাপ্রধান মইন ইউ আহমেদসহ ৫৮ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

প্রথমবারের মতো ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবস’ পালন

গত রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবস’ ঘোষণা করে একটি পরিপত্র জারি করে। মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো দিবসটি পালন করা হয়।

দিবসের শুরুতে ঢাকার বনানী সামরিক কবরস্থানে শহীদ সেনা সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। বিএনপি মহাসচিবসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা, সেনা কর্মকর্তা ও শহীদদের পরিবার এই কর্মসূচিতে অংশ নেন।

‘নতুন বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ এসেছে’

রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, “আজ আমরা দীর্ঘদিন পর ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বড় পরিবর্তন এসেছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট শক্তিকে উৎখাত করা হয়েছে। আমাদের সামনে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ এসেছে।”

তিনি আরও বলেন, “জাতির জন্য এটি একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়। তবে আমরা চাই, এই ঘটনার প্রকৃত সত্য উদঘাটন হোক, যেন ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে।”

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় সংঘটিত বিদ্রোহের ঘটনায় সেনাবাহিনীর ৫৭ জন চৌকস কর্মকর্তা নির্মমভাবে হত্যার শিকার হন। বিদ্রোহের মধ্যেই দেশের বিভিন্ন এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

এই হত্যাকাণ্ড দেশের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হয়, যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল।

সুত্রা২৪

সর্বশেষ সংবাদ
- Advertisement -spot_img
আরও নিউজ