25.7 C
Dhaka
Tuesday, July 8, 2025

৭৪ দিন পর কুয়েটে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু, শ্রেণিকক্ষে অনুপস্থিত শিক্ষকরা

advertisment
- Advertisement -spot_img

কুয়েট সংবাদদাতা:
৭৪ দিন বন্ধ থাকার পর খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) গত রোববার (৫ মে) থেকে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করলেও শ্রেণিকক্ষে অনুপস্থিত রয়েছেন শিক্ষকরা। ১৮ ফেব্রুয়ারির শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হওয়ায় তারা এখনও পাঠদান থেকে বিরত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষক নেতারা। ফলে দীর্ঘ বিরতির পর শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরলেও শিক্ষা কার্যক্রমে পূর্ণতা আসেনি, সৃষ্টি হয়েছে নতুন অনিশ্চয়তা।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও প্রশাসনের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। ওইদিন শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। অভিযোগ রয়েছে, কিছু শিক্ষার্থী বিদায়ী উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদসহ একাধিক শিক্ষককে অবরুদ্ধ, লাঞ্ছিত ও শারীরিকভাবে আক্রমণ করেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠায় পরদিন (১৯ ফেব্রুয়ারি) সিন্ডিকেট সভায় ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে পরিস্থিতির আরও অবনতির প্রেক্ষিতে ২৫ ফেব্রুয়ারিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য শিক্ষাকার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়।

এরপর দীর্ঘ আলোচনা ও দফায় দফায় বৈঠকের মাধ্যমে ৪ এপ্রিল সিন্ডিকেট সভায় ৫ মে থেকে একাডেমিক কার্যক্রম চালুর সিদ্ধান্ত হয়। তবে শিক্ষক সমিতি ১৮ এপ্রিল তাদের সাধারণ সভায় জানায়, শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনার বিচার না হওয়া পর্যন্ত কেউ ক্লাসে ফিরবেন না। একই সভায় অধ্যাপক আবদুল্লা আল ফারুকের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়।

কুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ফারুক হোসেন বলেন,
“১৮ ফেব্রুয়ারির ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ছাড়া আমরা একাডেমিক কার্যক্রমে ফিরছি না।”

এদিকে, চলমান সংকট নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক হজরত আলী প্রশাসনিক কর্মকর্তা, বিভিন্ন অনুষদের ডিন এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছেন। ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক আবদুল্লাহ ইলিয়াছ আক্তার জানান, নবনিযুক্ত উপাচার্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সবার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খোঁজার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

১৮ ফেব্রুয়ারির ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে তালা লাগিয়ে আন্দোলনে নামেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আবাসিক হল বন্ধ ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর ১৩ এপ্রিল থেকে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান ও পরে অনশন কর্মসূচি শুরু করেন। ফলস্বরূপ উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যকে অব্যাহতি দেওয়া হয় এবং ১ মে চুয়েটের অধ্যাপক হজরত আলীকে কুয়েটের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

বর্তমানে ক্লাস শুরু হলেও শিক্ষক অনুপস্থিত থাকায় শিক্ষাকার্যক্রমে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি আসেনি। শিক্ষক ও প্রশাসনের মধ্যকার অমীমাংসিত বিরোধ কবে নাগাদ মিটবে, সে প্রশ্নই এখন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে।

সর্বশেষ সংবাদ
- Advertisement -spot_img
আরও নিউজ