রেমিট্যান্স প্রবাহে নতুন রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের এখনো দুদিন বাকি থাকতেই রেমিট্যান্সের পরিমাণ ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। যা দেশীয় মুদ্রায় প্রায় ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। দেশের ইতিহাসে এর আগে কোনো অর্থবছরে এত বেশি রেমিট্যান্স আসেনি।
এর আগে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্সের রেকর্ড ছিল ২০২০-২১ অর্থবছরে, যখন করোনা মহামারির সময় প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছিলেন ২৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার (২ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলার)।
রোববার (২৯ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ঈদের পরও অব্যাহত রেমিট্যান্স প্রবাহ
চলতি জুন মাসের ২৮ দিনেই প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ২৫৪ কোটি মার্কিন ডলার (২.৫৪ বিলিয়ন ডলার)। যা দেশীয় মুদ্রায় প্রায় ৩১ হাজার ২৩০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২৩ টাকা ধরে)। মাস শেষে রেমিট্যান্স ২৭০ কোটি ডলার ছাড়াতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে স্বস্তি ফিরিয়েছে।
ধারাবাহিকতা ও রেকর্ড
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হুন্ডি প্রতিরোধে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ, প্রণোদনা ও ব্যাংকিং ব্যবস্থার উন্নয়নের ফলে এই ধারাবাহিকতা এসেছে।
গত মে মাসে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ২৯৭ কোটি ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩১ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। আর একক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে ২০২৫ সালের মার্চ মাসে—৩৩০ কোটি ডলার।
মাসভিত্তিক রেমিট্যান্স (২০২৪-২৫ অর্থবছর)
- জুলাই: ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ডলার
- আগস্ট: ২২২ কোটি ১৩ লাখ ডলার
- সেপ্টেম্বর: ২৪০ কোটি ৪১ লাখ ডলার
- অক্টোবর: ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার
- নভেম্বর: ২২০ কোটি ডলার
- ডিসেম্বর: ২৬৪ কোটি ডলার
- জানুয়ারি: ২১৯ কোটি ডলার
- ফেব্রুয়ারি: ২৫২ কোটি ৮০ লাখ ডলার
- মার্চ: ৩২৯ কোটি ডলার
- এপ্রিল: ২৭৫ কোটি ডলার
- মে: ২৯৭ কোটি ডলার
- জুন (২৮ দিন): ২৫৪ কোটি ডলার
মোট রেমিট্যান্স (জুলাই–২৮ জুন): ৩ হাজার ৫ কোটি ডলার
এটি আগের অর্থবছরের তুলনায় ২৬ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ৩৭৪ কোটি ডলার।