আগামী ১৯ জুলাই ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশের ডাক দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। এই সমাবেশকে দলের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় উপস্থিতির সমাবেশে পরিণত করতে প্রতিদিন ঢাকাসহ সারাদেশে মিছিল, মিটিং ও গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছে দলটি।
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের জানান, সমাবেশ সফল করতে ইতোমধ্যে ট্রেন ও লঞ্চ বাদ দিয়ে ১০ হাজার বাস ভাড়া করা হয়েছে। তার প্রত্যাশা, ১০ লক্ষাধিক নেতাকর্মীর সমাগম ঘটবে এবং এর জন্য ছয় হাজার স্বেচ্ছাসেবক সার্বিক শৃঙ্খলা ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে।
জাতীয় সমাবেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পুলিশের সার্বিক সহযোগিতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার জন্য মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) বিকেল ৩টা থেকে সোয়া ঘণ্টাব্যাপী ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সঙ্গে বৈঠক করেছে জামায়াত নেতৃবৃন্দ। অ্যাডভোকেট জুবায়েরের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের প্রতিনিধি দল ডিএমপির কর্মকর্তাদের সঙ্গে এই বৈঠকে অংশ নেয়।
সমাবেশ বাস্তবায়ন ও পুলিশের সহযোগিতা
বৈঠক শেষে অ্যাডভোকেট জুবায়ের বলেন, “সাত দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ১৯ জুলাই জাতীয় সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। আমরা পুলিশের কাছে সহযোগিতা ও পরামর্শ চেয়েছি। ডিএমপি আমাদের পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।”
তিনি আরও জানান, সমাবেশে আগত নেতাকর্মীদের গাড়ি কোন রুটে প্রবেশ করবে, কোথায় পার্কিং হবে, মাঠে মাইক বসানোসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ডিএমপি তাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছে এবং যোগাযোগ নম্বর গ্রহণ করেছে।
নিরাপত্তা ও শঙ্কা প্রসঙ্গে মন্তব্য
রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে হুমকি বা শঙ্কা রয়েছে কিনা জানতে চাইলে জুবায়ের বলেন, “এখন পর্যন্ত আমরা তেমন শঙ্কা করছি না। তারপরও ঢাকা মহানগর জামায়াতসহ সবাই সতর্ক আছি। অনেক নেতাকর্মী আসবেন, এজন্য নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় আলোচনা করা হয়েছে।”
তিনি জানান, সমাবেশ ব্যবস্থাপনায় ছয় হাজার স্বেচ্ছাসেবক কাজ করবেন। গাড়ি প্রবেশ-বহির্গমন, সিনিয়র নেতাদের যাতায়াত ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে স্বেচ্ছাসেবকরা দায়িত্ব পালন করবে।
সম্ভাব্য জনসমাগম
জুবায়ের বলেন, “আমরা আশা করছি ইতিহাসের সর্বোচ্চ উপস্থিতি থাকবে জাতীয় সমাবেশে। এখন পর্যন্ত আমরা বিশাল সাড়া পাচ্ছি। শুধু বাসেই ১০ হাজারের মতো আসবে। ট্রেন, লঞ্চ তো আছেই। আমরা ১০ লাখের বেশি জনসমাগম প্রত্যাশা করছি।”
বৈঠকে অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধি দল
জামায়াতের প্রতিনিধি দলে ছিলেন—
- ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ (কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি)
- ড. রেজাউল করিম (কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সেক্রেটারি)
- মো. দেলাওয়ার হোসেন (কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি)
- অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান (বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সেক্রেটারি)
- মোহাম্মদ কামাল হোসেন (সহকারী সেক্রেটারি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ)
- আবদুস সাত্তার সুমন (সহকারী প্রচার সম্পাদক, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ)
ডিএমপির পক্ষ থেকে সভায় সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইমস অ্যান্ড অপারেশন) নজরুল ইসলাম। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন— যুগ্ম কমিশনার মো. শহীদুল্লাহ, ট্রাফিক উপ-পুলিশ কমিশনার গৌতম কুমার বিশ্বাস, রমনা জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার মাসুদ আলমসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।h