29.8 C
Dhaka
Sunday, June 15, 2025

সিজিআই ইভেন্টে ড. ইউনূসের পাশে দাঁড়ানো বিতর্কিত তরুণ কে?

advertisment
- Advertisement -spot_img

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি প্রয়াত অধ্যাপক মো. হানিফের নাতি জাহিন রোহান রাজিন ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে ‘ক্লিনটন গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ লিডারস স্টেজ’ (সিজিআই) অনুষ্ঠানে ‘ঢুকে’ পড়েন বলে অভিযোগ উঠেছে।

নিউ ইয়র্কে সিজিআইয়ের ইভেন্টে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বক্তব্য দেওয়ার একপর্যায়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলমসহ রাজিন স্টেজে ওঠেন। পরে এ নিয়ে নানা মহলে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে এবং অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার পরিচয় তুলে ধরেন।

রাজিনের মায়ের নাম নাসরিন জাহান। তিনি প্রয়াত এমপি অধ্যাপক মো. হানিফের মেয়ে। রাজিনের বাবা ব্যবসায়ী রবিনটেক্স গ্রুপের মালিক, আবুল খায়ের মো. সাখাওয়াত। সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলাম তার ঘনিষ্ঠ বলেও জানা গেছে।

এ বিষয়ে জাহিন রোহান রাজিন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেয়েছিলাম সিজিআই ফেলো হিসেবে। ড. ইউনূস ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দকে যখন ডাকলেন, তখন আমি দর্শক সারিতে ছিলাম। পাশে ছিলেন দুই বিদেশি ভদ্রলোক। তারা আমাকে বললেন, তুমি বাংলাদেশি তরুণ, তুমিও যাও। তাই আমি কিছু না ভেবেই স্টেজে উঠে গিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘২০২১ সালের ইউনূস অ্যান্ড ইয়ুথ ফেলো আমি। আমার প্রতিষ্ঠান হাইড্রোকো প্লাসের কাজ এগিয়ে নিতে আমি ড. ইউনূসের সঙ্গে দেখা করতে চাচ্ছিলাম। নিউ ইয়র্কে সিজিআইয়ের অনুষ্ঠানে তিনি আসবেন শুনে খুশি হয়েছিলাম এ কারণে যে, তার কাছাকাছি যাওয়ার সুযোগ হবে।’

সাবেক মন্ত্রী তাজুলের সঙ্গে ছবি ছড়ানো প্রসঙ্গে জানতে জাহিন বলেন, ‘২০২২ সালে ঢাকা ওয়াসার সঙ্গে একটা কাজ করে হাইড্রোকো প্লাস। সে কাজের জন্যই মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে হয়েছিল। সে সময় ছবিটি তোলা। এটি কীভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এলো, তা জানি না। আন্দোলনের সময় দেশেই ছিলাম। এ আন্দোলন সমর্থন না করার প্রশ্নই আসে না।’

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে সিজিআই আয়োজিত অনুষ্ঠানে ড. ইউনূস তার বক্তব্যের এক পর্যায়ে তার সফরসঙ্গীদের মধ্যে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারীদের ডেকে নেন। তখন মঞ্চে ওঠেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ড. ইউনূসের বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আয়েশা সিদ্দিকা তিথি ও আরেক তরুণ। ওই তরুণই হলেন জিহান। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের কেউ নন।

এদিকে এ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম নিজের ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন, সিজিআইয়ের অনুষ্ঠানের ওই ব্যক্তি অনুপ্রবেশকারী এবং অসৎ লোক। তার এ অনুপ্রবেশ নাশকতার অংশ। এ ছাড়া তিনি দাবি করেন, ওই ব্যক্তি নিজস্ব ক্ষমতাবলে সিজিআই ইভেন্টে যোগ দিয়েছেন। তারাসহ ডেলিগেটরা তার উপস্থিতি ও উদ্দেশ্য জানতেন না। এমনকি সে ডেলিগেটদের কারো সঙ্গে যোগাযোগও করেনি বলে দাবি করেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা বিশেষ সহকারীর মাহফুজ আলমের ফেসবুক থেকে নেওয়া স্ক্রিনশট

মাহফুজ আলম বলেন, স্যার আমাদের মঞ্চে ডাকলে হুড়মুড় করে আমাদের আগে মঞ্চের দিকে তিনি দৌড়ে আসেন। আমি তাকে মঞ্চে যাওয়া থেকে প্রতিরোধ করতে পারিনি, যদিও আমি সন্দেহজনক ছিলাম। এ ছাড়া বিশ্বনেতা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে আমি অসহায় ছিলাম। এটি ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠীর অন্তর্ঘাতের একটি পূর্ব-পরিকল্পিত কাজ।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বলেন, আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানের নেতারা, সমন্বয়কারী ও যোদ্ধাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। আমরা তার অনুপ্রবেশ রোধ করতে পারিনি।

এ বিষয়ে আলজাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের খান তার ফেসবুকে এক পোস্টে বলেন, ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্ব দরবারে রাজিনকে সমন্বয়ক হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়ায় বেশ অবাক হয়েছিলাম। হাজারের বেশি প্রাণের বিনিময়ে যে স্বৈরাচারকে বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা ঝেটিয়ে বিদায় করলো, সেই স্বৈরাচার সমর্থক এবং ওই দলের ডোনার ব্যক্তির সন্তানকে সমন্বয়ক হিসেবে স্টেজে তোলার আসল মজেজাটা কি?’ এ ছাড়া তিনি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

সর্বশেষ সংবাদ
- Advertisement -spot_img
আরও নিউজ