বিশ্বব্যাপী ক্যাথলিক খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের শীর্ষ নেতা পোপ ফ্রান্সিস এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস একসঙ্গে একটি নতুন উদ্যোগ শুরু করেছেন। মানবতার জন্য একটি সমন্বিত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে তারা চালু করেছেন ‘পোপ ফ্রান্সিস থ্রি জিরোস ক্লাব’।
এই উদ্যোগটি মূলত রোমের প্রান্তিক যুবসমাজের জন্য একটি আশার প্রতীক। এটি তরুণদের উদ্ভাবনী ধারণা বিকাশ এবং স্থায়ী সমাধান তৈরির প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে। উদ্যোগটি নিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস রোমের ভিকার জেনারেল কার্ডিনাল বালদো রেইনার কাছে এক চিঠিতে লিখেছেন, তিনি এতে অংশ নিতে পেরে সম্মানিত বোধ করছেন। একই সঙ্গে তিনি কার্ডিনাল রেইনাকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
ড. ইউনূস তার চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, এই উদ্যোগ কেবল দারিদ্র্য, বেকারত্ব এবং নেট কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামানোর লক্ষ্যে নয়। এটি একটি নতুন সভ্যতা গড়ে তোলার প্রচেষ্টা, যা সহানুভূতি, সাম্য এবং পরিবেশের স্থায়িত্বের ওপর ভিত্তি করে। এই সভ্যতায় কেউ পিছিয়ে থাকবে না; বরং প্রত্যেকে নিজের ভবিষ্যৎ গড়তে সক্ষম হবে এবং একই সঙ্গে বৈশ্বিক মানব পরিবারের গর্বিত সদস্য হিসেবে পরিচিত হবে।
পোপ ফ্রান্সিস ও ড. ইউনূস বিশ্ববাসীকে এই উদ্যোগে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলেন, “চলুন, একটি ঐক্যবদ্ধ মানব পরিবারের স্বপ্ন দেখি, যেখানে আমরা সবাই একই মাটির সন্তান। প্রত্যেকে নিজের বিশ্বাস ও দৃষ্টিভঙ্গির সমৃদ্ধি নিয়ে আসে এবং আমরা সবাই একে অপরের ভাই-বোন হিসেবে পাশে থাকি।”
বর্তমানে বিশ্বব্যাপী অন্তত ৪ হাজার ৬০০টি থ্রি জিরোস ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এর বেশির ভাগই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গড়ে উঠেছে এবং এই ক্লাবগুলো ড. ইউনূসের নতুন সভ্যতার দৃষ্টিভঙ্গি দ্বারা অনুপ্রাণিত।
পোপ ফ্রান্সিস ও ড. ইউনূসের এই যুগান্তকারী উদ্যোগ বিশ্বব্যাপী একটি নতুন সামাজিক বিপ্লবের সূচনা করতে পারে, যেখানে সম্মান, সাম্য এবং পৃথিবীর প্রতি দায়িত্বশীলতা হবে সবার মূলমন্ত্র।