চট্টগ্রামে উগ্রবাদী ইসকনের সদস্যদের হাতে নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের জানাজায় সাধারণ মানুষের ঢল নেমেছে। বুধবার সকালে চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ, প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির নেতারা অংশ নেন। এরপর দ্বিতীয় জানাজা হয় জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদ ময়দানে। জানাজা শেষে আলিফের মরদেহ তার নিজ গ্রামের বাড়ি, লোহাগাড়া থানার চুনতিতে নিয়ে যাওয়া হয়।
মঙ্গলবার রাতে নগরীর কোতোয়ালি থানা এলাকায় যৌথবাহিনীর অভিযানে ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) কাজী মো. তারেক আজিজ জানিয়েছেন, আটককৃতদের যাচাই-বাছাই চলছে এবং তদন্ত শেষে তাদের নাম প্রকাশ করা হবে। আইনজীবী হত্যার ঘটনায় একটি এবং পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার জন্য আরেকটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
ঘটনার সূত্রপাত হয় মঙ্গলবার দুপুরে, যখন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী নামের এক সংগঠককে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করা হয়। জামিন আবেদন নাকচ হওয়ার পর তাকে কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজন ভ্যানে তোলা হলে তার অনুসারীরা লালদিঘী পাড় এলাকায় বিক্ষোভ শুরু করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও বিজিবি লাঠিচার্জ এবং সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে। সংঘর্ষে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ নিহত হন এবং পুলিশের ১০ সদস্যসহ অন্তত ৩৭ জন আহত হন।
চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির নেতারা জানান, আদালত থেকে বের হওয়ার পর চিন্ময়ের অনুসারীরা সাইফুলকে টেনে-হিঁচড়ে বান্ডেল রোডে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে বেধড়ক মারধর ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
এই ঘটনার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি আদালত বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। নেতারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির দাবি জানিয়েছেন এবং দোষীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছেন।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্রিয় রয়েছে।