ভারতীয় গণমাধ্যমের বর্তমান ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেছেন, এসব প্রচারকাজ দুই দেশের মধ্যে স্বাভাবিক সম্পর্ক উন্নয়নে কোনোভাবেই সহায়ক নয়।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত “বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক: প্রত্যাশা, প্রতিবন্ধকতা এবং ভবিষ্যৎ” শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এই মন্তব্য করেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশের সাম্প্রতিক নানা বিষয় নিয়ে ভারতীয় মিডিয়ার প্রচারণা দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্কের জন্য বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এটি আমি দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছি।”
তিনি দেশীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “ভারতীয় মিডিয়ার ভুল তথ্য ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে আমাদের সংবাদমাধ্যমগুলোর ভূমিকা আরও জোরালো হওয়া উচিত। তাদের মিথ্যাচারগুলো সামনে আনতে হবে এবং জনগণের কাছে সঠিক চিত্র তুলে ধরতে হবে।”
সীমান্ত হত্যা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সীমান্তে গুলি করে মানুষ হত্যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমি বিশ্বের অনেক দেশ ভ্রমণ করেছি। অপরাধী থাকবেই, তবে তাদের গুলি করে মেরে ফেলা সমাধান নয়। ভারতকে সীমান্ত অপরাধীদের ধরে তাদের নিজস্ব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দিতে হবে এবং প্রচলিত আইনে বিচার করতে হবে।”
জাতীয় স্বার্থে ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, “জাতীয় ঐক্যের অভাবে আমরা পিছিয়ে পড়েছি। জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করতে হলে আমাদের মধ্যে ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা করা অপরিহার্য।”
শক্তিশালী প্রতিবেশী দেশগুলোর প্রভাব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “প্রভাব বিস্তার সবসময় থাকবে। তবে আমাদের নিজেদের ভেতরে শৃঙ্খলা ও সক্ষমতা তৈরি করতে হবে, যাতে অযাচিত প্রভাব এড়ানো যায়।”
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, “বাংলাদেশ কারও জন্য হুমকি নয়। একইভাবে, আমরা অন্য কাউকেও আমাদের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে দিতে পারি না। আমাদের লক্ষ্য হবে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে শক্তিশালী হওয়া।”
এই বক্তব্যগুলোতে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়ন এবং অভ্যন্তরীণ সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন, যা দেশের সার্বিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।