চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন শুনানি মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) হয়নি। তার পক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না এবং রাষ্ট্রপক্ষও সময়ের আবেদন করে। ফলে আদালত নতুন শুনানির তারিখ ২০২৫ সালের ২ জানুয়ারি নির্ধারণ করেন।
চট্টগ্রাম আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) এনামুল হক জানিয়েছেন, আসামিপক্ষের আইনজীবীরা অনুপস্থিত থাকায় এবং রাষ্ট্রপক্ষ শুনানি না করায় আদালত পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করেছেন। তিনি বলেন, এই অবস্থায় উচ্চ আদালতে যাওয়ার সুযোগ নেই এবং ম্যাজিস্ট্রেট আদালতেও শুনানির আবেদন করা সম্ভব নয়।
একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইনজীবী জানান, ২ জানুয়ারির আগে জামিন পেতে হলে চিন্ময় দাসের পক্ষে তারিখ এগিয়ে আনার জন্য আবেদন করতে হবে। যদি মহানগর দায়রা জজ আদালত তা নাকচ করে, তবে উচ্চ আদালতে আপিল করা যেতে পারে। উচ্চ আদালত নির্দেশ দিলে ২ জানুয়ারির আগে শুনানির সুযোগ তৈরি হতে পারে। তবে জামিনের সিদ্ধান্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের ওপর নির্ভর করবে।
চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মফিজুল হক ভূঁইয়ার পদত্যাগের দাবিতে এবং অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার বিচারের দাবিতে আইনজীবীরা বিক্ষোভ করেছেন। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে আদালত প্রাঙ্গণে তারা স্লোগান দেন।
এর আগে, সোমবার চিন্ময়ের জামিন না মঞ্জুর করায় তার অনুসারীদের সংঘটিত তাণ্ডবের ঘটনায় আইনজীবীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এদিন আইনজীবী নেজাম উদ্দিন ও সানজিদা গফুর দুই আসামির পক্ষে ওকালতনামা জমা দেন। তবে নেজাম উদ্দিনকে আইনজীবীদের একটি দল আটকে রেখে পদত্যাগপত্রে সই করায়
গত ২৫ নভেম্বর বিকেলে ঢাকায় রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার হন বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস। ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রামের একটি আদালতে হাজির করার পর জামিন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
এরপর ইসকন ও চিন্ময়ের অনুসারীরা আদালত এলাকায় বিক্ষোভ করেন। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের একপর্যায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যা করা হয়। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ওই ঘটনার চিত্র পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় ২৯ নভেম্বর কোতোয়ালি থানায় নিহতের বাবা জামাল উদ্দিনের দায়ের করা মামলায় ৩১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। আরও দুটি মামলায় ১১৬ জনকে আসামি করা হয়।
চট্টগ্রামে চিন্ময় দাসকে কেন্দ্র করে সংঘটিত সহিংসতা, আদালতের কর্মসূচি ও আইনজীবীদের বিক্ষোভ পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিষয়টি দ্রুত সমাধানে আইনি প্রক্রিয়াগুলো কার্যকর করতে হবে, যাতে পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে না যায়।