ভারত তার সীমান্ত এলাকায় ড্রোন থেকে আসা হুমকি মোকাবিলায় নতুন পদক্ষেপ হিসেবে অ্যান্টি-ড্রোন ইউনিট মোতায়েন করার ঘোষণা দিয়েছে। এই পদক্ষেপ বাংলাদেশ ও পাকিস্তান উভয় সীমান্তেই বাস্তবায়িত হবে বলে জানিয়েছে ভারতের কর্তৃপক্ষ।
ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সীমান্তের অন্য প্রান্ত থেকে ড্রোনের মাধ্যমে আসা অবৈধ কার্যক্রম ও নিরাপত্তা হুমকি ঠেকাতে তারা এই উদ্যোগ নিয়েছে। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল-এর একটি প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশিত হয়।
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বিএসএফের ৬০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এক ভাষণে ড্রোন হুমকি মোকাবিলায় ভারতের সক্রিয় ভূমিকার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সাথে সীমান্তে “সংবেদনশীল এলাকাগুলো পর্যবেক্ষণ” করার জন্য ভারতে নতুন ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে লেজার-সজ্জিত অ্যান্টি-ড্রোন ইউনিট মোতায়েন করা হবে, যা ইতিমধ্যে পাঞ্জাব সীমান্তে কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে।
অমিত শাহ আরও জানান, এই ব্যবস্থার মাধ্যমে পাঞ্জাব সীমান্তে ড্রোন শনাক্তকরণ এবং নিষ্ক্রিয়করণের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৩ সালে ১১০টি ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছিল, যেখানে এই বছর সংখ্যা বেড়ে ২৬০-এর বেশি হয়েছে। বেশিরভাগ ঘটনা পাঞ্জাব সীমান্তে ঘটলেও রাজস্থান ও জম্মুতে এর হার তুলনামূলক কম।
ভারতের বাংলাদেশ সীমান্তের দৈর্ঘ্য ৪ হাজার ৯৬ কিলোমিটার এবং পাকিস্তান সীমান্ত ২ হাজার ২৮৯ কিলোমিটার। উভয় সীমান্ত সুরক্ষায় ভারত বর্তমানে কম্প্রিহেনসিভ ইন্টিগ্রেটেড বর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিআইবিএমএস) কার্যক্রম চালু রেখেছে। অমিত শাহ বলেন, আসামের ধুবরি অঞ্চলে এই ব্যবস্থার ইতিবাচক ফলাফল দেখা গেছে, তবে আরও উন্নতির প্রয়োজন রয়েছে।
ভারতের এই ঘোষণা এমন এক সময়ে এসেছে যখন বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র ও জনতার আন্দোলন চলছে। এই পরিস্থিতিতে ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কেও টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে। তবে সীমান্ত সুরক্ষার ক্ষেত্রে ভারতের এই উদ্যোগ দুই দেশের সম্পর্কের নতুন মাত্রা তৈরি করতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।