ঢাকা, ৩০ এপ্রিল: ২০২৪ সালের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বিশেষ আবাসন প্রকল্পের আওতায় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম জেলা মিলিয়ে ৩০০টি পুনর্বাসন ঘর বিতরণ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকালে তেজগাঁও কার্যালয় থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি ওই জেলাগুলোর বন্যাকবলিত পরিবারের হাতে ঘরের চাবি তুলে দেন।
বন্যায় সম্পূর্ণ বা অংশকূপ্তভাবে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ৩০০টি পরিবারের পুনর্বাসনের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের যৌথ তত্ত্বাবধানে দুটি ডিজাইনে মোট ৩০০টি ঘর নির্মাণ করা হয়। প্রতিটি ঘরে রয়েছে দুইটি শয়নকক্ষ, কমন স্পেস, টয়লেট, রান্নাঘর ও বারান্দা। প্রথম ডিজাইনের ঘরের আয়তন ৪৯২ বর্গফুট (প্রাক্কলিত খরচ ৭,২৫,৬৯৪ টাকা) এবং দ্বিতীয় ডিজাইনের আয়তন ৫০০ বর্গফুট (৭,২৬,৬৭৮ টাকা)।
অগ্রাধিকারভুক্ত তিনশ পরিবারের বাছাই করা হয়েছিল জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে গঠিত এক কমিটি দ্বারা, যেখানে সশস্ত্র বাহিনী, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং জেলা প্রশাসক মনোনীত অন্যান্য প্রতিনিধিরা ছিলেন। বাছাইয়ের সময় প্রতি পরিবারের আয়ের স্তর, আর্থিক অক্ষমতা ও গৃহহীনতার প্রকৃতি বিবেচনায় রাখা হয়।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “যারা আজ নতুন করে নিজস্ব ঠিকানা পেয়েছেন, তাদের সকলকে অভিনন্দন। দেশের মানুষ আপনারা যে সাহস যুগিয়েছেন, তা সবসময় মনে রাখবেন।” তিনি ধন্যবাদ জানান স্থানীয় প্রশাসন, সেনাবাহিনী, এলজিইডি প্রকৌশলীগণ এবং আশ্রয়ণ প্রকল্পের কর্মকর্তাদের পরিশ্রমের জন্য।
বৃহস্পতিবার সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ভার্চুয়ালি বক্তব্য রেখে জানান, “এ ধরনের দায়িত্ব যদি ভবিষ্যতেও দেওয়া হয়, আমরা সদা প্রস্তুত থাকবো।” সরকারের ত্রাণ তহবিল থেকে প্রকল্পটির জন্য বরাদ্দ ছিল ৫০ কোটি টাকা; সেনাবাহিনী দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে মাত্র ২৪ কোটি ৯৮ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকায় তিনশোটি ঘর নির্মাণ সম্পন্ন করেছে। দুইটি জায়গার ভূমি সংক্রান্ত জটিলতার কারণে ২৯৮টি ঘরই ইতোমধ্যে হস্তান্তর করা সম্ভব হয়েছে; বাকি দুটি ঘর শীঘ্রই নির্মাণ শেষে বিতরণ করা হবে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম. সিরাজ উদ্দিন মিয়া, এবং বিমান বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস. এম. কামরুল হাসান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামের চারজন উপকারভোগীও ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন।