27.2 C
Dhaka
Tuesday, June 17, 2025

৫ রাজাকারকে কুপিয়ে হত্যা করা বীর মুক্তিযোদ্ধা সখিনা বেগম মারা গেছেন

advertisment
- Advertisement -spot_img

কিশোরগঞ্জ, ১৭ জুন:
বীর নারী মুক্তিযোদ্ধা সখিনা বেগম আর নেই। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে অসামান্য সাহসিকতা ও বীরত্বের সাক্ষর রেখে দেশের জন্য লড়াই করা এই নারী মুক্তিযোদ্ধা মঙ্গলবার (১৭ জুন) ভোর ৫টার দিকে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার হিলচিয়ার বড়মাইপাড়া গ্রামে বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯২ বছর।

কিশোরগঞ্জের হাওরবেষ্টিত নিকলী উপজেলার গুরুই গ্রামে জন্ম নেওয়া সখিনা বেগমের বাবার নাম সোনাফর মিয়া ও মায়ের নাম দুঃখী বিবি। স্বামী কিতাব আলী মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগেই মারা যান। নিঃসন্তান এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে শেষ জীবনে দেখাশোনা করতেন তার ভাগনি ফাইরুন্নেছা আক্তার।

ফাইরুন্নেছা জানান, মঙ্গলবার আসরের নামাজ শেষে গুরুই মাঠে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে এবং পরে তাকে গুরুই কবরস্থানে দাফন করা হবে।
নিকলী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেহানা মজুমদার জানিয়েছেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা সখিনা বেগমকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

বীরত্বের স্মৃতি

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সখিনা বেগম রাজাকারদের তথ্য সংগ্রহ ও রান্নার কাজের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করতেন। তার ভাগনে মতিউর রহমান সম্মুখযুদ্ধে শহিদ হন, যা সখিনাকে প্রতিশোধপরায়ণ করে তোলে।

পরবর্তীতে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে নির্যাতিত হন তিনি। কিন্তু সেখান থেকে পালিয়ে এসে এক ধারালো দা নিয়ে পাঁচ রাজাকারকে কুপিয়ে হত্যা করেন। তার সেই ব্যবহৃত দা বর্তমানে ঢাকার মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে। সেখানে তার নামসহ উল্লেখ রয়েছে এই বীরত্বগাঁথার।

সখিনা বেগম শুধু একজন নারী মুক্তিযোদ্ধাই নন, তিনি এক জীবন্ত ইতিহাস—যিনি নারীদেরও যে সম্মুখযুদ্ধে শত্রুর মোকাবিলা করার সাহস ছিল, তা প্রমাণ করেছেন।

সর্বশেষ সংবাদ
- Advertisement -spot_img
আরও নিউজ