বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে বাংলাদেশ সরকার চাইলে এখনই দেশি-বিদেশি আইনজীবী নিয়োগ করতে পারে। রোববার (১৫ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের বোর্ডরুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, দেশ থেকে বিভিন্ন দেশে পাচার করা টাকা উদ্ধারে যেসব ডকুমেন্টস দরকার ছিল, তার জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এখন সরকার চাইলেই মামলা করতে পারবে। মামলা পরিচালনার জন্য ইতোমধ্যে আমাদের সঙ্গে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক ল ফার্ম যোগাযোগ করেছে। এখানে ১০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে আগ্রহী তারা।
এসব ফার্ম কীভাবে মামলা থেকে নিজেদের ব্যয় নির্বাহ করবে—জানতে চাইলে গভর্নর জানান, পাচার টাকা উদ্ধারের পর সেখান থেকে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত পার্সেন্টেজ নেবে তারা। বাকি টাকা সরকারকে বুঝিয়ে দেবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ ভালো আমাদের। সে কারণেই সেখানে বাংলাদেশ থেকে পাচার করা টাকা উদ্ধারে তৎপরতাও বেশি। শুধু তাই নয়, ব্রিটিশ সরকার পাচার করা টাকা উদ্ধারে আমাদের পরামর্শ ও সব রকমের সহযোগিতা দিয়ে আসছে। তবে আমেরিকা এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে। দেশটিতে নতুন সরকার এসেছে। নীতি প্রণয়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে তাদের কাজ চলছে।
তিনি আরও বলেন, চূড়ান্ত রায় ছাড়া কোনো সম্পদ উদ্ধার করা সম্ভব নয়। তাই আগে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে তা আদালতে উপস্থাপন করতে হবে। বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আদালত সিদ্ধান্ত নেবেন যে, আমরা যে দাবি করছি তা সঠিক কি না।
এ সময় বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতি (এডিআর) ব্যবহারের কথা উল্লেখ করে গভর্নর বলেন, এডিআর পদ্ধতিতেও অর্থ উদ্ধার সম্ভব, তবে তা আদালতের বাইরের একটি প্রক্রিয়া। এক্ষেত্রে দুপক্ষের আইনজীবী আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে এ পদ্ধতিতে যাবেন কি না, সেটি নির্ভর করবে সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।
গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, দেশীয় সম্পদ উদ্ধারে দেশীয় আদালত এবং বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে বিদেশি আদালতে পদক্ষেপ নিতে হবে। সব প্রস্তুতি বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়ে রেখেছে, সরকারের নির্দেশ পেলেই এখন আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া সম্ভব।