তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির দ্বারপ্রান্তে আছে বলে দাবি করে আসছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক বিশ্লেষণে উঠে এসেছে, এই বার্তা তিনি ১৯৯২ সাল থেকেই পুনরাবৃত্তি করে চলেছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৯২ সালে ইসরায়েলের সংসদ কনেসেটে এমপি হিসেবে ভাষণে নেতানিয়াহু বলেছিলেন, “ইরান আগামী তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সক্ষমতা অর্জন করবে।”
পরবর্তীতে ১৯৯৫ সালে তার লেখা বই ফাইটিং টেরোরিজম-এও তিনি একই পূর্বাভাস দেন।
নেতানিয়াহুর এই দাবিগুলো মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে তার সম্পর্ককে সময় সময় ঘনিষ্ঠ করেছে। বিশেষ করে ২০০২ সালে এক মার্কিন কংগ্রেস কমিটিতে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “ইরাক ও ইরান উভয়ই পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের পথে রয়েছে।” সেই পরিপ্রেক্ষিতেই যুক্তরাষ্ট্র ইরাকে হামলা চালায়—যা পরবর্তীতে ভুয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রমাণিত হয়, কারণ সেখান থেকে কোনো গণবিধ্বংসী অস্ত্রের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।
২০০৯ সালে উইকিলিকস-এর ফাঁস করা মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক তারবার্তায় দেখা যায়, নেতানিয়াহু কংগ্রেস সদস্যদের জানান, “ইরান পারমাণবিক সক্ষমতা থেকে এক বা দুই বছর দূরে।” ২০১২ সালে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে তিনি একটি কার্টুন বোমা চিত্র দেখিয়ে বলেন, “পরবর্তী বসন্ত বা সর্বোচ্চ গ্রীষ্মের মধ্যে ইরান শেষ ধাপে পৌঁছে যাবে।”
সেই সময়ের থেকে ৩০ বছরেরও বেশি কেটে গেছে। এর মধ্যেও নেতানিয়াহুর বক্তব্য একই থেকে গেছে। চলমান সংঘাতে আবারও তিনি দাবি করছেন, “ইরান খুব শিগগিরই পারমাণবিক বোমা তৈরি করতে পারে।”
কিন্তু এ বছরের শুরুতে মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালকের প্রকাশিত এক বিবৃতিতে স্পষ্ট বলা হয়, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র বানানোর চেষ্টা করছে না। তার পরেও নেতানিয়াহু সেই পুরনো বক্তব্যেই অটল রয়েছেন।
📌 সূত্র: আল জাজিরা, উইকিলিকস, ইউএনGA, মার্কিন কংগ্রেস