ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চলছে, তবে এতে সময় লাগবে বলে মঙ্গলবার সতর্ক করেছে মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অবশ্য আলোচনায় অগ্রগতির বিষয়ে আশাবাদ প্রকাশ করেছিলেন।
গাজায় ২১ মাসের লড়াইয়ের পর রবিবার থেকে নতুন একটি পরোক্ষ আলোচনা শুরু হয়। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি নিশ্চিত করেন, আলোচনা মঙ্গলবার তৃতীয় দিনে গড়িয়েছে।
কোনো চুক্তি কাছাকাছি কি না—এই প্রশ্নের জবাবে আল-আনসারি সাংবাদিকদের এক নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘এই মুহূর্তে কোনো সময়সীমা আমি দিতে পারছি না, তবে আমি এতটুকু বলতে পারি, এটির (চুক্তি) জন্য আমাদের সময় লাগবে।’
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর যুদ্ধ শুরু হয়। তার পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও মিসরের সঙ্গে যৌথভাবে কাতার যুদ্ধবিরতির উদ্দেশ্যে একের পর এক আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। ২০২৩ সালের নভেম্বরে এক সপ্তাহব্যাপী যুদ্ধবিরতি ও ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া দুই মাসের বিরতির বাইরে দোহা ও কায়রোতে অনুষ্ঠিত এসব পরোক্ষ আলোচনা সংঘাত শেষ করতে পারেনি।
তবে যুক্তরাষ্ট্র সফরে থাকা ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকের সময় ট্রাম্প বলেন, দোহায় আলোচনাগুলো ‘খুব ভালোভাবে’ এগোচ্ছে এবং হামাস ‘যুদ্ধবিরতি চায়’।
আলোচনার বিস্তারিত প্রকাশ না করলেও আনসারি জানান, তারা বর্তমানে আলোচনার কাঠামো ঠিক করার ওপরই গুরুত্ব দিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে দুই পক্ষই দোহায় রয়েছে এবং আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনার কাঠামো নিয়ে আলাদাভাবে কথা বলছি। তাই আলোচনার মূল ধাপ এখনো শুরু হয়নি। তবে আমরা উভয় পক্ষের সঙ্গে কাঠামো নিয়ে কথা বলছি।’
আনসারি ‘ইতিবাচক সম্পৃক্ততা’র কথা উল্লেখ করে বলেন, আলোচনার দলগুলো এখনো কাতারের রাজধানী ত্যাগ না করায় সেটিকে ‘সব সময় ভালো লক্ষণ’ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
আলোচনার ঘনিষ্ঠ ফিলিস্তিনি সূত্র দুটি আগেই এএফপিকে জানায়, প্রস্তাবিত চুক্তিতে একটি ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির কথা রয়েছে, যার আওতায় হামাস ১০ জন জীবিত জিম্মি ও কয়েকটি মৃতদেহ ফেরত দেবে, এর বিনিময়ে ইসরায়েলের হাতে আটক ফিলিস্তিনিদের মুক্তি দেওয়া হবে।
তবে সূত্রগুলো জানায়, হামাস এর পাশাপাশি ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার, আলোচনা চলাকালে পুনরায় যুদ্ধ শুরুর বিরুদ্ধে নিশ্চয়তা এবং জাতিসংঘের নেতৃত্বাধীন ত্রাণ বিতরণ ব্যবস্থার পুনঃপ্রতিষ্ঠা চায়।
আলোচনার শুরুর দিকে নেতানিয়াহু বলেছিলেন, মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে পাঠানো যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে হামাস যে জবাব দিয়েছে, তাতে ‘অগ্রহণযোগ্য’ শর্ত রয়েছে।