বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, এবার জনগণ প্রতীক দেখে আর ভোট দিবে না, জনগণ দলীয় কর্মকাণ্ড এবং প্রার্থীর যোগ্যতা বিবেচনায় ভোট দিবে।
তিনি বলেন, “কারা নিজ দলের কর্মীদের হত্যা করছে, কারা ধর্ষণ করছে, কারা সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, লুটপাট করছে তা জনগণের কাছে দিবালোকের মতো পরিষ্কার। তরুণদের কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে পুরো জাতি বলবে— বয়কট সন্ত্রাস-চাঁদাবাজ-দখলবাজ বয়কট! তরুণ প্রজন্ম বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখবে।”
মঙ্গলবার (২৪ জুন) ভোটকেন্দ্রভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা কমিটির দায়িত্বশীলদের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
গণহত্যার বিচার ছাড়া নতুন বাংলাদেশ নয়
নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, শহীদ ও আহতদের পরিবারের আকাঙ্ক্ষা পূরণে নির্বাচনের আগেই সংস্কার ও গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে নতুন করে ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটবে।
তিনি আরও বলেন, “জামায়াতে ইসলামীর প্রথম দাবি ছিল শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা এবং আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসন। সরকার উদ্যোগ নিলেও বাস্তবায়ন হয়নি। গেজেটে অনেক শহীদের নামই আসেনি।”
জামায়াত ইতোমধ্যে শহীদ পরিবারকে নগদ ২ লাখ টাকা করে সহায়তা দিয়েছে এবং শহীদদের আত্মদানের ইতিহাস সংরক্ষণে ১০ খণ্ডে ১৫০০ পৃষ্ঠার বই প্রকাশ করেছে বলেও জানান তিনি।
নির্বাচনই একমাত্র লক্ষ্য নয়
নূরুল ইসলাম বলেন, “জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনমুখী দল। কিন্তু আমাদের লক্ষ্য কেবল নির্বাচন নয়— রাষ্ট্র সংস্কার, গণহত্যার বিচার, মানুষের নিরাপত্তা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করাও গুরুত্বপূর্ণ।”
তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও মানুষ নিরাপদ নয়। নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর সবার নিরাপত্তা অনিশ্চিত। ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হলেই জনগণ নিরাপদ হবে এবং দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে থাকবে। কেউ ইচ্ছেমতো পণ্যের দাম বাড়াতে পারবে না।
ড. শফিকুল ও ড. মান্নানের বক্তব্য
মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি জেনারেল ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, “গত ৫৩ বছর মানুষের তৈরি মতবাদে রাষ্ট্র চালানো হয়েছে। ইসলামই শান্তির পথ। জামায়াত সন্ত্রাস বা দুর্নীতির পথে নয়, বরং মানুষের হৃদয় জয়ের জন্য রাজনীতি করে।”
তিনি আরও বলেন, “ভোট ডাকাতদের এবার জনগণ দাঁতভাঙা জবাব দিবে। প্রয়োজনে জীবন দিবে জামায়াতের নেতাকর্মীরা, কিন্তু সন্ত্রাসীদের ক্ষমতায় বসতে দেবে না।”
ঢাকা-৬ আসনে মনোনীত প্রার্থী ড. আব্দুল মান্নান বলেন, জামায়াত বিজয়ী হলে পুরান ঢাকার ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনা হবে, বুড়িগঙ্গা নদী পুনরুদ্ধার করা হবে। দখল ও দূষণমুক্ত নদী ঢাকাবাসীকে উপহার দেওয়া হবে। ব্যবসায়ী ও সাধারণ নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, দুর্নীতি থাকবে না।
তিনি অমুসলিমদের অধিকার রক্ষা ও নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেন।