30.4 C
Dhaka
Monday, June 16, 2025

‘পৃথিবীর কোথাও ফ্যাসিস্টদের পুনরুত্থান হয়নি’ – রিজভী

advertisment
- Advertisement -spot_img

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, পৃথিবীর কোথাও ফ্যাসিস্টদের পুনরুত্থান হয়নি। ইতালি জার্মানিসহ পৃথিবীর কোথাও গণতন্ত্রকামী মানুষ ফ্যাসিস্টদের পুনরুত্থান হতে দেয়নি। বাংলাদেশেও ফ্যাসিস্টদের পুনরুত্থান হবে না।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরে ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদ তাহমিদ ও শহীদ মাসুদ রানার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের নির্দেশনায় আর্থিক সহযোগিতা করা হয়। 

রুহুল কবির রিজভী বলেন, যারা নিজ দেশের শিশুদের রক্ত পান করে ক্লাসে ক্লাসে, তারা কিসের রাজনীতি করবে? তাদের পুনরুত্থান হলে আন্দোলনে যাদের চোখ হারিয়ে অন্ধ হয়েছে, হাত-পাসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ হারিয়ে পঙ্গু হয়েছে তাদেরকে নির্বিচারে হত্যা করবে এবং গণতন্ত্রের পক্ষে যারা সোচ্চার ছিলেন, যাদের গত সাড়ে ১৫ বছর গুম, নির্যাতন এবং গায়েবি মামলায় বন্দি করে রাখা হয়েছিল, তাদের এবং তাদের পরিবারের ওপর নেমে আসবে শেখ হাসিনার প্রাণবিনাষী কর্মসূচি।

রুহুল কবির রিজভীর সঙ্গে ছিলেন বিএনপি নেতা বজলুল বাছিত আঞ্জু, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’র আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন প্রমুখ।  

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘যে পরিবারগুলো আমরা দেখে গেলাম, তারা ছিল কর্মক্ষম পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। মাসুদ রানার রোজগারে তার পরিবার চলত। তার স্ত্রী অসহায়। তার শিশু কন্যাটি আর্তনাদ করছে। তাহমিদ এমএ পাস করলে তার চাকরি হতো। তার পরিবার নিম্ন মধ্যবিত্ত। সেমি বস্তির মতো জায়গায় তারা বসবাস করে। কত স্বপ্ন নিয়ে তারা লেখা পড়া করেছে। এরা তো নিজের জীবন দিয়ে গণতন্ত্র কিনেছে, নিজের রক্ত দিয়ে এরা গণতন্ত্র কিনেছে। এটা যেন ব্যর্থ না হয়। আপনাকে অনুরোধ করব, যেসব পরিবারে শহীদ হয়েছে- তাদের কোনো ভাই বা স্ত্রী যেই থাকুক তাদের যেন শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী সরকারি চাকরি দেওয়া হয়। এটা খুব জরুরি প্রয়োজন। 

সমবায় ব্যাংকে জমা রাখা ৭ হাজার ৩৯৮ ভরি সোনা ভুয়া মালিক সাজিয়ে ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান, যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের (দক্ষিণ) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহমেদ মহি বিক্রি করে দিয়েছেন বলে দাবি করেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘কী দেশ ছিল এটা! অনাচার অবিচার লুটপাট-এসবের লাইসেন্স দিয়ে দিয়েছিল শেখ হাসিনা, তার কথাই ছিল আমার ক্ষমতা ঠিক রেখে তোরা যা পারিস কর। শেখ হাসিনা তো প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না, তিনি দস্যু ও মাফিয়া সিন্ডিকেটের প্রধান ছিলেন। পুলিশ-সিভিল প্রশাসন প্রত্যেক জায়গায় শেখ হাসিনার আশীর্বাদপুষ্টরা শতশত কোটি টাকার মালিক। প্রশাসনিক কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম খান তার গ্রামের বাড়িতে ছয় তলা বাড়ি। এই তো প্রশাসন সাজানো হয়েছে। এরা এখন বিভিন্ন পর্যায়ে আছে। তারা তো শেখ হাসিনার পক্ষেই কাজ করবে।’ 

তিনি বলেন, যারা প্রশাসন পরিচালনা করছেন, তাদের নিয়ে নানা কথাবার্তা শুনছি। এটা দুঃখজনক। বিপ্লবী সরকার পৃথিবীর দেশে দেশে দেখেছি তড়িৎ গতিতে দুষিত রক্ত বের করে দেয় সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে। কিন্তু বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আমরা বিপ্লবী সরকার বলি। তাহলে কী করে এই সমস্ত ভয়ঙ্কর দুর্নীতিবাজ টাকা লুণ্ঠনকারীরা এখনো প্রশাসনে অবস্থান করতে পারে?

তিনি বলেন, পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে ২০১৪ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত অতি ধনী লোকের সৃষ্টি হয়েছে। তারা কারা? যারা বিদ্যুৎ উৎপাদনের নামে টাকা লুট করেছে, যারা মেগা প্রজেক্টের নামে টাকা লুট করেছে, যারা পদ্মা সেতুর নামে টাকা লুট করেছে, যারা শেয়ার বাজারসহ বিভিন্ন সেক্টরে লুট করেছে তারা আজ আঙুল ফুলে কলা গাছ হয়েছে। এদের লোকজনই বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করছেন। নতুন করে ফ্যাসিজমের উত্থান ঘটুক দেশের মানুষ তা চায় না।

শেখ হাসিনা সরকার বিশ্বের কোন দেশের সঙ্গে কী অসমচুক্তি করেছে তা জনগণের সামনে প্রকাশ করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে জোর দাবি জানান রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, অসম চুক্তিসমুহ যদি জনসম্মুখে প্রকাশ করা না হয়, তাহলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যোগ্যতা এবং দক্ষতা নিয়ে মানুষ প্রশ্ন করা শুরু করবে। এই পরিস্থিতি যেন তৈরি না হয়, সে ব্যাপারে সরকারকে সতর্ক করেন রিজভী। 

ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ গণতন্ত্রের পক্ষে হাটতে শুরু করেছে বলে মন্তব্য করেন এই বিএনপি নেতা রিজভী। এ সময় অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে রুহুল কবির রিজভী বলেন, প্রয়োজনীয় সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থার করুন।

সর্বশেষ সংবাদ
- Advertisement -spot_img
আরও নিউজ