বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস সম্প্রতি বলেছেন, “অনেক সংগ্রাম করেছি, আন্দোলন করেছি, জেল খেটেছি। মূল চাওয়া ছিল শেখ হাসিনাবিহীন বাংলাদেশ। দীর্ঘ লড়াই শেষে আজ আমরা সেই অবস্থায় এসেছি। এবার আমাদের লক্ষ্য—আওয়ামী লীগবিহীন বাংলাদেশ।”
আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ আর ভদ্রতা একসঙ্গে চলে না। এই দল গণতন্ত্রের পথের বাধা।”
২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের রাজনৈতিক সহিংসতার স্মরণে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় মির্জা আব্বাস এসব কথা বলেন। এই আয়োজনটি ছিল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে, যা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে অনুষ্ঠিত হয়। জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান সভার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
আব্বাস আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামির সাথে তার সম্পর্ক অনেক দিনের, বিশেষ করে ২০০১ সালে জামায়াত নেতারা তার সহায়তায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি আওয়ামী লীগের শাসনামলে ১৭ বার জেলে গেছেন এবং বিভিন্ন নেতাদের সঙ্গে কারাগারে সময় কাটিয়েছেন। এতে তার ও বিএনপির জন্য সেই সময়কালে শান্তি আর নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জ বেড়েছে।
তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, “আওয়ামী লীগ বিদায় নিয়েছে ভেবে খুশি হওয়ার কিছু নেই, কারণ তাদের অনুগামীরা এখনো প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে অবস্থান করছে। এদের বাদ দিয়ে প্রকৃত গণতন্ত্র সম্ভব নয়।” তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা দেশের জন্য বিপজ্জনক এবং বাংলাদেশকে নিয়ে বিভিন্ন মহল পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছে, যা উচিত নয়।
আব্বাস রাজনৈতিক ঐক্যের ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, “বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে, কারণ দেশের স্বার্থে সব শ্রেণীর মানুষ যখন এক হয়, তখনই দেশের জন্য ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব।”
তিনি জামায়াতের নেতাদের কাছে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা পৌঁছে দেন এবং তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আমাদের পূর্বে সফলভাবে ঐক্যবদ্ধ হতে না পারলেও এবার আমাদের একজোট হয়ে দেশকে সুন্দরভাবে গড়ে তোলার চেষ্টা করতে হবে।”
অক্টোবরের সহিংস ঘটনায় শহীদদের স্মরণে তিনি পরিবারগুলিকে মামলা করার আহ্বান জানান এবং যারা অন্যায়ভাবে জেল খেটে প্রাণ দিয়েছেন, তাদের জন্য প্রার্থনা করেন। তিনি বলেন, “এই সকল নির্যাতিত মানুষদের জন্যও বিচার হওয়া উচিত, ঠিক যেমন শেখ মুজিব হত্যার বিচার হয়েছে।”