বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সংবিধান সংস্কারে একগুচ্ছ প্রস্তাব দিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অন্তর্ভুক্তি, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠন, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য আনা, উপরাষ্ট্রপতি ও উপপ্রধানমন্ত্রীর পদ সৃজনসহ আরও বেশ কয়েকটি বিষয়।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সকালে জাতীয় সংসদ ভবনে সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান আলী রীয়াজের কাছে তাদের লিখিত প্রস্তাব জমা দেয় বিএনপি। প্রস্তাব জমাদানের পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “সংবিধানের প্রস্তাবনা থেকে তফসিল পর্যন্ত ৬২টি জায়গায় সংশোধনীর প্রস্তাব দিয়েছি। প্রস্তাবে নতুন কিছু বিষয় যোগ করা হয়েছে, যা জনগণের আকাঙ্ক্ষা এবং শহীদদের রক্তের অঙ্গীকারকে মাথায় রেখে তৈরি করা হয়েছে। এসব পরিবর্তনের লক্ষ্য ভবিষ্যতে সংসদীয় একনায়কতন্ত্র ঠেকানো।”
১. একই ব্যক্তি পরপর দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না।
২. সংসদে উচ্চকক্ষ (দ্বিকক্ষ) সৃষ্টি।
৩. অধস্তন আদালত সুপ্রিম কোর্টের অধীনে রাখতে হবে।
৪. গণভোটের বিধান পুনরায় চালু করতে হবে।
সালাহ উদ্দিন আহমদ আরও জানান, “সংবিধানের প্রস্তাবনায় প্রজাতন্ত্র, নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ, আইন বিভাগ, নির্বাচন কমিশন এবং তফসিলসহ সব বিষয় যুক্ত করে ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। লক্ষ্য হলো গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ভিত্তিতে একটি ভারসাম্যপূর্ণ রাষ্ট্র গঠন।”
সংবিধান পুনর্লিখনের প্রসঙ্গে সালাহ উদ্দিন বলেন, “আমরা এমন একটি গণতান্ত্রিক সংবিধান চাচ্ছি, যা জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করবে। আমাদের প্রস্তাবগুলো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে পাঠানো হবে।”
সংবিধান সংশোধন প্রক্রিয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই প্রস্তাবগুলো নিয়ে সব রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন এবং বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে। যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হবে, তা নির্বাচনি ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত করে সেগুলো বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করা যেতে পারে।”
বিএনপির এসব প্রস্তাব দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষার পথে নতুন দিক উন্মোচন করবে বলে দলটির আশা।