পঞ্চম সংশোধনীর পূর্ববর্তী সংবিধান পুনরায় কার্যকর করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। আজ রোববার (২০ এপ্রিল) সকালে জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের (এনসিসি) সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে এ কথা জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, “পঞ্চম সংশোধনীর আগে যেভাবে সংবিধান ছিল, আমরা সেই অবস্থানে ফিরে যেতে চাই। রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তনের কোনো প্রয়োজন বা যৌক্তিকতা নেই—গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ নামই বহাল থাকতে হবে।”
১৯৭৯ সালের ৬ এপ্রিল তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আমলে জাতীয় সংসদে পঞ্চম সংশোধনী উত্থাপন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শাহ আজিজুর রহমান। এই সংশোধনীর মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ১৯৭৯ সালের ৫ এপ্রিল পর্যন্ত সামরিক শাসনামলের সব কর্মকাণ্ডকে বৈধতা দেওয়া হয়। তবে ২০১০ সালে সুপ্রিম কোর্ট এই সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করে।
এ সময় সালাহউদ্দিন আহমেদ আরও জানান, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ‘মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা’ নামে একটি নতুন অধ্যায় সংযোজনের প্রস্তাব দিয়েছে, যা নিয়ে বিএনপি ভেবে দেখবে। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, ইন্টারনেটকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে দলটি একমত। তাছাড়া নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন ৫০ থেকে বাড়িয়ে ১০০ করার প্রস্তাবেও সম্মতি রয়েছে।
বিএনপির পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, দলের প্রধান প্রধানমন্ত্রী হবেন কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দল নিজের হাতে রাখতে চায়। দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ (বাই-ক্যামেরাল পার্লামেন্ট) বিষয়ক আলোচনা এখনো চলমান।
এদিকে, এনসিসির মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা হ্রাসের বিষয়ে বিএনপি প্রয়োজনীয়তা দেখছে না বলে মন্তব্য করেন সালাহউদ্দিন। তবে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে তিন মাস মেয়াদি কেয়ারটেকার সরকারের ব্যবস্থা সংবিধানে রাখা উচিত বলে মত দেন তিনি। সংসদ, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ৫ বছর নির্ধারণের পক্ষে মত দেয় বিএনপি। পাশাপাশি পরপর দুইবারের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না—এই বিধান রাখার কথা বললেও, একবার বিরতি দিয়ে তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথ খোলা রাখার পক্ষে মত দিয়েছে দলটি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, “আলোচনা ইতিবাচকভাবে এগোচ্ছে। অনেক বিষয়ে মতৈক্য হয়েছে। আমরা মনে করি, দেশের স্বার্থে সর্বজনগ্রহণযোগ্য সমাধানই হওয়া উচিত।”