ঘরের মাঠে প্রায় অজেয় ছিল ভারত। টানা ১৮টি সিরিজে একবারও হারেনি দলটি। কিন্তু সেই গৌরব ভেঙে দিয়েছিল নিউজিল্যান্ড আগের টেস্টেই। শেষ টেস্টে তাই ভারতের লক্ষ্য ছিল অন্তত সিরিজে হার এড়ানো।
কিন্তু রোহিত শর্মার নেতৃত্বাধীন দল সেটাও পারল না। আজ ১৪৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১২১ রানেই গুটিয়ে গেল তারা। ২৬ রানে জয়ী হয়ে নিউজিল্যান্ড ভারতের মাটিতেই সিরিজটা ৩-০ ব্যবধানে জিতে নিল। ২০০০ সালের পর এই প্রথমবারের মতো ঘরের মাটিতে টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হলো ভারত।
শেষ দিনে ম্যাচের প্রতিদ্বন্দ্বিতা জমে উঠেছিল ঋষভ পান্ত এবং নিউজিল্যান্ডের মধ্যে। ১৪৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে ২৯ রানে ৫ উইকেট হারানো ভারত তখন ধুঁকছিল। তবে পান্ত প্রতিরোধ গড়ে ফিফটি তুলে নেন ১০০ স্ট্রাইক রেটে। মধ্যাহ্ন বিরতির সময় ভারতের স্কোর ছিল ৬ উইকেটে ৯২, তখনও ম্যাচ ছিল সমানে সমান। কারণ, উইকেটে তখনো ছিলেন ঋষভ পান্ত।
নিউজিল্যান্ডের জন্য পান্তকে আউট করাটা ছিল জরুরি, আর সে কাজটি করেন এজাজ পাটেল। পুরো সিরিজে ভারতের ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে ধারাবাহিক সফল এজাজের সামনে একমাত্র পান্তই তিন অঙ্কের স্ট্রাইক রেটে রান তুলছিলেন। তবে শেষ ইনিংসে তিনিই পান্তকে আউট করেন। ৫৭ বলে ৬৪ রান করা পান্ত শেষ পর্যন্ত উইকেটরক্ষক টম ব্লান্ডেলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। আর সঙ্গে সঙ্গে ভারতের জয়ের আশা শেষ হয়ে যায়।
১০৭ রানে সপ্তম উইকেট হারানো ভারত এরপর মাত্র ১২১ রানেই অলআউট হয়ে যায়। ভারতের টপ অর্ডারও খুব একটা প্রতিরোধ গড়তে পারেনি। মাত্র ১৪৭ রানের লক্ষ্য হলেও রোহিত শর্মা অতিরিক্ত আক্রমণাত্মক হয়ে পেসার ম্যাট হেনরির বলে আউট হন। এরপর শুবমান গিল, বিরাট কোহলি, সরফরাজ খানরা কিছুই করতে পারেননি। ফলাফল – ২৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ভারত বিপর্যয়ের মুখে পড়ে।
ঋষভ পান্ত চেষ্টা করেছিলেন ভারতকে টেনে তোলার। তবে তার বিদায়ের পর আবারও ভেঙে পড়ে দলের ইনিংস। এর আগে নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংসে করেছিল ২৩৫ রান, যার জবাবে ভারত করেছিল ২৬৩ রান, ফলে ২৮ রানের লিড পায় তারা। দ্বিতীয় ইনিংসে নিউজিল্যান্ড ১৭৪ রান করলে ভারতের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৪৭ রান। কিন্তু এজাজ পাটেলের দুর্দান্ত বোলিংয়ে সেটাও ছুঁতে পারেনি দলটি।
ফলাফল, ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা। ঘরের মাঠে এমন ফল ভারতের জন্য বিরল। শেষবার তারা হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল ২০০০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে। দীর্ঘ ১৮ টেস্ট সিরিজে অপরাজিত থাকার গৌরবও এবার শেষ হলো হোয়াইটওয়াশের লজ্জার সাথে।