টানা ১২ দিনের সংঘাতে ইসরায়েলজুড়ে ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত চিত্র এখনো পুরোপুরি সামনে আসেনি। কারণ, ইসরায়েল সরকার এই বিষয়ে তথ্য প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রেখেছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েলিদের ক্ষতিপূরণ চাওয়ার তথ্য থেকে বোঝা যাচ্ছে, দেশে যে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তার পরিমাণ যথেষ্ট উদ্বেগজনক।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) বার্তা সংস্থা আনাদোলু এক প্রতিবেদনে জানায়, সংঘাত শুরুর পর থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়া পর্যন্ত ১২ দিনে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের কারণে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতির জন্য ৩৯ হাজার ক্ষতিপূরণের আবেদন জমা পড়েছে ইসরায়েলে।
ইয়েদিয়থ আহারোনোথ পত্রিকার বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, ১৩ জুন ইসরায়েল-ইরান সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি কর কর্তৃপক্ষ ৩৮ হাজার ৭০০টি ক্ষতিপূরণ দাবির আবেদন পেয়েছে। এর মধ্যে:
- ভবনের ক্ষতির জন্য: ৩০,৮০৯টি
- যানবাহনের ক্ষতির জন্য: ৩,৭১৩টি
- সরঞ্জাম ও অন্যান্য জিনিসপত্রের ক্ষতির জন্য: ৪,০৮৫টি
এছাড়া অনুমান করা হচ্ছে, বহু ভবন এখনও ক্ষতিপূরণ দাবি করে আবেদন জমা দেয়নি।
ইসরায়েলি ওয়েবসাইট বেহাদ্রেই হারেদিম জানিয়েছে, কেবল তেল আবিবেই ২৪,৯৩২টি এবং আশকেলনে ১০,৭৯৩টি আবেদন জমা পড়েছে। তবে এই ক্ষতিগুলোর আর্থিক মূল্য কত হতে পারে— সে বিষয়ে এখনো সরকারিভাবে বিস্তারিত হিসাব প্রকাশ করা হয়নি।
সংঘাতের পটভূমি
১৩ জুন ইসরায়েল অভিযোগ করে, ইরান পারমাণবিক বোমা তৈরির দ্বারপ্রান্তে রয়েছে, এবং এর জেরে তেহরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়। যদিও ইরান এই অভিযোগ দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করে।
এর পর তেহরানের প্রতিশোধমূলক হামলায় ইসরায়েলজুড়ে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা শুরু হয়। পরে যুক্তরাষ্ট্রও এই সংঘাতে যোগ দিয়ে তিনটি ইরানি পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলা চালায়।
দুই আঞ্চলিক শত্রুর মধ্যে ১২ দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘাতের পর অবশেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হস্তক্ষেপে মঙ্গলবার সকালে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।