পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের গুলশানের ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাটে থাকা তাঁর পরিবারের ব্যবহৃত জিনিসপত্র নিলামে তোলা হচ্ছে। ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত এ বিষয়ে একটি নিলাম কমিটি গঠন করেছেন।
আজ সোমবার কমিটির এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, কয়েক দিনের মধ্যে সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বেনজীর ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ব্যবহৃত এসব জিনিসপত্র নিলামে তোলা হবে। নিলামপ্রক্রিয়ার মানদণ্ড ঠিক করা হয়েছে এবং আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
এরই মধ্যে সম্পদের একটি বিশদ জব্দ তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তালিকাটি প্রস্তুত করতে গিয়ে নিলাম কমিটির সদস্যরা বিস্মিত হন। তাঁদের বক্তব্য, একজন প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা কীভাবে এমন দুর্নীতির মহোৎসব করতে পারেন, তা ভাবতেই অবাক হতে হয়। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ইতোমধ্যে বেনজীরের বিরুদ্ধে শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেছে।
কমিটির এক সদস্য বাসসকে জানান, “ফ্ল্যাটের ব্যবহৃত জিনিসপত্রের তালিকা তৈরি করতে গিয়ে আমাদের মনে হয়েছে, যেন আমরা ফিলিপাইনের মার্কোস ও ইমেলদা মার্কোসের সম্পদের তালিকা তৈরি করছি। আশির দশকের আলোচিত সেই দম্পতির মতোই বেনজীর দম্পতির ভোগবিলাস আমাদের চমকে দিয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, শুধু একটি ভবনের ফ্ল্যাট থেকেই জব্দ করা হয়েছে ২৪৬টি ভিন্ন ভিন্ন আইটেম। কিছু জিনিসপত্রের পরিমাণ শুনলেই বোঝা যাবে এদের বিলাসিতা কতটা মাত্রায় পৌঁছেছিল—
- টি-শার্ট: ৭২২টি
- শার্ট: ১২২টি
- প্যান্ট: ২৬৬টি
- ব্লেজার: ৩০টি
- স্যুট: ৮টি
- পাঞ্জাবি: ২২৪টি
- পায়জামা: ৪৭টি
- স্যান্ডেল: ৮৮ জোড়া
- কেডস: ৩৫ জোড়া
- জুতা: ৩৮ জোড়া
- শাড়ি: ৪৯৪টি
- থ্রি–পিস: ২৫০ সেট
- সালোয়ার–কামিজ: ৪৯৬টি
- ব্লাউজ: ৬৫টি
- জামা: ২১২টি
- জ্যাকেট: ৫৬টি
- বেডশিট: ১০৯টি
- লেডিস ভ্যানিটি ব্যাগ: ৭৫টি
- লেডিস টপস: ৬২২টি
- পুরুষ সোয়েটার: ১১টি
- লেডিস সোয়েটার: ৩৪টি
- লেডিস প্যান্ট: ৩৫৫টি
- লেডিস টি-শার্ট: ২৮টি
- নাইট ড্রেস: ৫৮টি
- ওড়না: ৩৪৭টি
- শাল/চাদর: ৮৯টি
- শীতের জামা: ১৩২টি
- লেহেঙ্গা: ১৬টি
- সানগ্লাস: ৩৪টি
- ট্রাউজার: ৬৭টি
নিলাম কমিটির ভাষ্য অনুযায়ী, এসব সামগ্রী সংগ্রহের পেছনে ছিল ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির বিস্তৃত চক্র। এখন এসব বিলাসবহুল জিনিসপত্র নিলামের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ফেরত আনার উদ্যোগ চলছে।