ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, যাকে ‘সেভেন সিস্টার্স’ নামে অভিহিত করা হয়, সেখানে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করতে যাচ্ছে ভারত সরকার। আসন্ন উত্তর-পূর্ব বিনিয়োগকারী সম্মেলন-২০২৫ উপলক্ষে এক ভার্চুয়াল বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রহ্মণম জয়শঙ্কর এই ঘোষণা দেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়া জানায়, সম্ভাব্য অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠকে জয়শঙ্কর উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ভৌগোলিক, অর্থনৈতিক ও কৌশলগত গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “এই অঞ্চল ভারতীয় উপমহাদেশ ও আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সংযোগ স্থাপনের সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করে।”
জয়শঙ্কর বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ভারতের ‘প্রতিবেশী প্রথম’ নীতি, ‘অ্যাক্ট ইস্ট পলিসি’, এবং বিমসটেক (বেঙ্গল উদ্যোগ)-এর কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। এই অঞ্চলের উন্নয়ন এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাড়ানোই সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য।
তিনি আরও বলেন, “ত্রিপক্ষীয় মহাসড়ক প্রকল্প, কালাদান মাল্টিমোডাল প্রকল্পসহ বেশ কিছু উদ্যোগ এখান থেকেই চালু হয়েছে। এই অঞ্চলকে ঘিরে ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা বিশাল।”
আন্তর্জাতিক অংশীদারদের প্রতি আহ্বান
পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাষ্ট্রদূতদের অনুরোধ জানান, যেন তারা নিজ নিজ দেশের সরকার ও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এই অঞ্চলের সম্ভাবনার বার্তা পৌঁছে দেন। “আমরা চাই আপনারা এই অঞ্চলকে চিনুন, এখানকার প্রকল্প ও সম্ভাবনার কথা আপনার দেশের ব্যবসায়ীদের জানান।” — বলেন জয়শঙ্কর
বৈঠক শেষে জয়শঙ্কর এক্স (পূর্বতন টুইটার)-এ লিখেন, “উত্তর-পূর্ব ভারত শুধু পর্যটন কিংবা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য নয়, এটি এখন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রবেশদ্বার এবং বৈশ্বিক কর্মক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে যাচ্ছে।”
এর আগে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস উত্তর-পূর্ব ভারতকে ‘স্থলবেষ্টিত’ এবং বাংলাদেশকে ‘এই অঞ্চলের একমাত্র সমুদ্রপথ’ হিসেবে উল্লেখ করেন। এ মন্তব্যের সমালোচনা করেছিলেন জয়শঙ্কর। এমন প্রেক্ষাপটে এই বিনিয়োগ সম্মেলন আয়োজনের ঘোষণা দিল দিল্লি।
বিশ্লেষকদের মতে, এই উদ্যোগ শুধু অর্থনৈতিক নয়, কৌশলগতভাবে বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করারও একটি চেষ্টার অংশ।